ইতিহাস
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওর বেস্টিত উপজেলা নাসিরনগর। ১৭৬৫ সালে দেওয়ানী লাভের সময় নাসিরনগর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হস্তগত হয়। ১৮৩০ সালে সরাইল, দাউদপুর, হরিপুর, বেজুরা ও সতরকণ্ডল পরগনা ময়মনসিংহ হতে ত্রিপুরা জেলার কাছে হস্তান্তরিত হয়। ১৮৬০ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার (১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা গঠিত হয় এবং ১৯৬০ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লা নাম রাখা হয়) অধীনে নাসিরনগর মহকুমার সৃষ্টি হয়। ১৮৭৫ সালে নাসিরনগর মহকুমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা নামকরণ করা হয়। ১৭৯২ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জেলাকে থানায় বিভক্ত করার নির্দেশ দেন। সিদ্ধান্ত হয় যে প্রতি ৪০০ বর্গমাইল পরিমিত এলাকা নিয়ে থানা গঠন করা হবে। ১৮৮৫ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা জেলাকে এগারটি থানায় ভাগ করা হয়। তখন এ জেলাতে ১৫টি পুলিশ ফাঁড়িও ছিল। পুলিশ ফাঁড়ির সংখ্যা কমিয়ে দুটি করা হয়। পুলিশ ফাঁড়ি দুটি হল- নাসিরনগর এবং মরিচাকান্দি। ফৌজদারি কার্যক্রমের সুবিধার জন্য ১৯১০ সালে নাসিরনগর পুলিশ ফাঁড়িকে থানা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে ১ আগস্ট নাসিরনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয়।
নামকরণ
কথিত আছে, হযরত শাহ জালাল(রহ.) সিলেটের গৌড় গোবিন্দ রাজার রাজ্য আক্রমণ এবং ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য যাওয়ার পথে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন এখানে অবস্থান করেছিলেন। তার নামানুসারে এই এলাকার নাম নাসিরনগর রাখা হয়। এ ইউনিয়নের নাম থেকেই প্রথমে থানা এবং পরবর্তীতে নাসিরনগর উপজেলার নামকরণ করা হয়। অন্য একটি জনশ্রুতি হল, মোগল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ঈশা খাঁ বংশের জনৈক মজলিশ গাজীকে সরাইল পরগণার দেওয়ান নিযুক্ত করা হয়। সেই বংশের জনৈক নাসির মাহমুদ দেওয়ানের নামানুসারে নাসিরনগরের নামকরণ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাকাল
ফৌজদারি কার্যক্রমের সুবিধার জন্য ১৯১০ সালে নাসিরনগর পুলিশ ফাঁড়িকে থানা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে ১ আগস্ট নাসিরনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয়।
অবস্থান ও আয়তন
নাসিরনগর উপজেলার আয়তন ২৯৪.৩৬ বর্গ কিলোমিটার (৭২,৭৩৮ একর)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এ উপজেলাটি চট্টগ্রাম বিভাগের সর্ব উত্তরের উপজেলা। এ উপজেলার উত্তরে বলভদ্রা নদী ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে সরাইল উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা ও বাজিতপুর উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
নাসিরনগর উপজেলায় বর্তমানে ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। মোট মৌজা ৯৬টি এবং মোট গ্রাম ১২৮টি। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম নাসিরনগর থানার আওতাধীন।
ইউনিয়নসমূহ
১। চাতলপাড় ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ৩৪৫৩৪ জন, ২০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- গুংগিয়াখাই, ফেদিয়ারকান্দি, বেকীনগর, ফকিরদিয়া, বারো আইল, কাঠাল কান্দি, কুচুয়া, চাতলপাড়, জয়নগর, মনকুটা, বিলেরপাড়, পতইর, বাড়াইচিরা, রতনপুর, ফুলকার কান্দি, কৈরালপুর, বড়নগর, ধানতলিয়া, ইছাপুর ও হাসিমপুর। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব রফিকুল ইসলাম।
২। ভলাকুট ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ২২,৫০১ জন, ০৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- বালিখোলা, কাজিপাড়া, দুর্গাপুর, কান্দিসাধন, কুটুই, বাঘি ও ভলাকুট। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব রুবেল মিয়া।
৩। গোয়ালনগর ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১৪,৩৭৪ জন, ১৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- মাইজখোলা, কদমতলী, কেরলকোপা, সোনাতলী, জামারবালী, লালুয়ারটুক, সিমেরকান্দি, রাজনগর, দক্ষিণদিয়া, সোনাগাঁও, রায়পুর, চুরগিয়ালপুর, পিয়ালাপুর, গোয়ালনগর, মাছমা ও ভিটাডুবি। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব মোঃ আজহারুল হক চৌধুরী।
৪। কুন্ডা ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ২১,০৮৬ জন, ১০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- কাহেতুরা, বেরুইন, বড়িয়াচঙ্গ,বিটুই, মহিষবেড়, শ্রীরামপুর, আন্দ্রাবহ, কুন্ডা, তুল্লাপাড়া ও মসলন্দপুর।বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব নাসির উদ্দিন।
৫। নাসিরনগর সদর ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ২২,৭৮৬ জন, ১১টি গ্রাম নিয়ে উপজেলা সদর ইউনিয়ন গঠিত । গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- টেকানগর, মনোহরপুর, নাছিরপুর, কামারগাঁও, নাসিরনগর, দাঁতমন্ডল, কুলীকুন্ডা, ফুলপুর, ধনকুড়া, মহেন্দুরা ও আনন্দপুর। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব পুতুল রানী।
৬। বুড়িশ্বর ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ২৫,৯৩৮জন, ১৪টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- গংগানগর, আরজিশ্রীখর, চানপাড়া, বুড়িশ্বও, ইছাপুর, শ্রীঘর, আশুরাইল, বেনীপাড়া, দক্ষিণ সিংহগ্রাম, তিলপাড়া, আলাকপুর, লক্ষীপুর, ভোলাউক ও ভাটপাড়া। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব ইকবাল চৌধুরী।
৭। ফান্দাউক ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১৩,৭২৮ জন, ০৪টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- আতুকুড়া, ফান্দাউক, রসুলপুর ও উত্তর সিংহগ্রাম। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব ফারুকুজ্জামান ফারুক।
৮। গুনিয়াউক ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১১,২১০ জন, ০৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- চিতনা, গুটমা, বুরুংগা, করগ্রাম, নিশ্চিন্তপুর, দাওড়া ও গুনিয়াউক। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব জিতু মিয়া।
০৯। চাপরতলা ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১২,৬৯৫ জন, ০৮টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- বেঙ্গাউতা, কালিউতা, মাতাইল, চাপরতলা,গাড়াউক, বড়ইউরি, খান্দুরা ও উড়িয়াইন। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব মোঃ মনছুর আলী।
১০। গোকর্ণ ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ২৭,৯০৮ জন, ১০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- লাহাজুরা, নুরপুর, ব্রাহ্মণশাসন, পাঠানিশার, চটিপাড়া, সূচীউড়া, গোকর্ণ, চৈয়ারকুড়ি, জেঠাগ্রাম ও ডিঘর। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব সৈয়দ শাহিন।
১১। পূর্বভাগ ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১৫,১৬৯ জন, ০৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- মগবুলপুর, পূর্বভাগ, চান্দেরপাড়া, ভুবন, কয়রপুর, কদমতলী, বড়দলিয়া, বেলুয়া ও কিফাতনগর। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব আক্তার হোসেন।
১২। হরিপুর ইউনিয়নঃ জনসংখ্যা ১৮,৪৬৪ জন, ০৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- জারুয়া, আলিয়ারা, শ্যামপুর, শংকরাদহ, রুস্তমপুর, নরহা, হরিণবেড়, হরিপুর ও আহসানপুর। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব ফারুক মিয়া ।
১৩। ধরমন্ডল ইউনিয়নঃ জনসংখ্যাঃ ১৫,২৭৬ জন, ০৫ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ ইউনিয়ন। গ্রামগুলোর নাম হচ্ছে- দেওরত, ধরমন্ডল, গন্না, দৌলতপুর ও সাইউক। বর্তমান চেয়ারম্যানের নাম জনাব শফিকুল ইসলাম।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নাসিরনগর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩,০৯,০১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৫০,৫৭৭ জন এবং মহিলা ১,৫৮,৪৩৪ জন। মোট পরিবার ৫৯,০২৪টি। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১,০৫০ জন।
নাসিরনগর উপজেলার ধর্মবিশ্বাস (২০১১)
ইসলাম ধর্ম (৮৩.৬৮৪১%)
হিন্দু ধর্ম (১৬.২৯৪২%)
খ্রিস্ট ধর্ম (০.০০৭৮%)
বৌদ্ধ ধর্ম (০.০০১৬%)
অন্যান্য (০.০১২৩%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ উপজেলার ২,৫৮,৫৯৩ জন ইসলাম, ৫০,৩৫১ জন হিন্দু, ২৪ জন খ্রিস্টান, ৫ জন বৌদ্ধ এবং ৩৮ জন অন্যান্য ধর্মের অনুসারী।
শিক্ষা ব্যবস্থা
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নাসিরনগর উপজেলার সাক্ষরতার হার ৩৪.৯%। এ উপজেলায় ২টি ডিগ্রী কলেজ (১টি সরকারি), ২টি স্কুল এন্ড কলেজ, ১টি আলিম মাদ্রাসা, ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১টি সরকারি), ৫টি দাখিল মাদ্রাসা, ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৫টি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং ৯টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
০১। ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়
০২। চাতলপাড় ডিগ্রী কলেজ
০৩। নাসিরনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়
০৪। গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ
০৫। বিজয়লক্ষ্মী স্কুল এন্ড কলেজ
০৬। দাতঁ মন্ডল এরফানিয়া আলীম মাদ্রাসা
০৭। নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
০৮। কুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়
০৯। নাসিরনগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
১০। জেঠাগ্রাম নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা
১১। জেঠাগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
১২। ইনস্টিটিউট অফ লাইভস্টক সাইন্স এন্ড টেকনোলজি
১৩। টেকানগর নূরে হেরা নূরানীয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা
যোগাযোগ ব্যবস্থা
হাওড়-বাওড়, বিল-ঝিল বেষ্টিত নাসিরনগর উপজেলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্ব উত্তরে অবস্থিত। নাসিরনগর উপজেলাটির উত্তরে-সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা। উত্তর-পূর্ব দিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা। পূর্বে মাধবপুর উপজেলা। দক্ষিণ-পূর্বে মাধবপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা। দক্ষিণে সরাইল উপজেলা। পশ্চিমে মেঘনা নদী। জেলা সদর হতে এর দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। জেলা সদরের যোগাযোগের মাধ্যম সড়ক ও নদী পথ। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই পশ্চাদগামী। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চলে যাবার প্রধান মাধ্যম নৌ যোগাযোগ। এছাড়া আভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম সড়ক ও নৌপথ। উপজেলার অনেক জায়গাতে আজও পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে শীতকালসহ শুকনা মৌসুমে এ উপজেলার অনেক অঞ্চলের যোগাযোগো মাধ্যম একমাত্র পায়ের পথ। কোথাও এর দূরত্ব প্রায় ১০(দশ) কিলোমিটার। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতিকরণে এ অঞ্চলের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ, জনগণও প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
অর্থনীতি
নাসিরনগর উপজেলার প্রায় ৭১% লোক কৃষিজীবী। উপজেলার প্রধান প্রধান ফসলের মধ্যে ধান, গম, পাট, সরিষা, আলু ও ডাল। এ উপজেলার লোকজন নদী, পুকুর ও নলকূপ এর পানি গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করেন। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক ছেলেমেয়ে শিক্ষার আলো হতে বঞ্চিত। হাওড় বেষ্টিত উপজেলা হওয়ায় সারা বছর কাজ করার সুযোগ থাকে না। কেবল রবি/ইরি মৌসুমে কাজের সুযোগ থাকে। তাছাড়া এ উপজেলার বেশীর ভাগ জমি এক ফসলী। এ উপজেলার বেশীর ভাগ মানুষের অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা ভাল নয়। এ উপজেলার অনেক লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করেন। তবে এ উপজেলার মানুষ খুবই পরিশ্রমী ও কর্মঠ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
স্বাস্থ্য
নাসিরনগর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৩টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ১০ শয্যাবিশিষ্ট ১টি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ
০১। আব্দুর রসুল ব্রিটিশ ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী।
০২। এস এম সাফি মাহমুদ রাজনীতিবিদ এবং ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ সদস্য।
০৩। নবাব সৈয়দ শামসুল হুদা- ব্রিটিশ ভারতীয় মুসলিম রাজনৈতিক নেতা।
০৪। বদরুদ্দৌজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম- রাজনীতিবিদ এবং একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য।
০৫। মোজাম্মেল হক - বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, এবং তৃতীয় ও চতুর্থ জাতীয় সংসদ সদস্য।
০৬। মোহাম্মদ ছায়েদুল হক - রাজনীতিবিদ, আইনজীবী এবং সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ সদস্য এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী।
০৭। সৈয়দ মুর্শেদ কামাল- রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং পঞ্চম জাতীয় সংসদ সদস্য।
ভাষা ও সংস্কৃতি
নাসিরনগর উপজেলাকে ঘিরে রয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম এবং সিলেটের লাখাই উপজেলা। তাই এই উপজেলার আঞ্চলিক ভাষা বিশ্লেষণে দেখা যায় এতে সন্নিহিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা এবং সিলেটের ভাষার মিশ্রিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মেঘনা, লংগন, তিতাস, খাস্তি ইত্যাদি নদীর গতিপ্রকৃতি বিরাট হাওড় মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ উপজেলার প্রচলিত সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি যেসব মেলার আয়োজন হয় তার মধ্যে কুলিকুণ্ডা শুটকি মেলা, ভলাকুট কার্তিক মেলা এবং গোকর্ণ সিদ্ধেশ্বরী মেলা,জেঠাগ্রাম কালিচুরা বান্নি( মেলা)।উল্লেখযোগ্য।
নদ-নদী
নাসিরনগর উপজেলায় প্রবাহিত নদ-নদীগুলোহল মেঘনা, তিতাস, লংগন, বলভদ্রা, কাস্তি এবং বেমালিয়া নদী।
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
০১। নাসিরনগর ডাক বাংলো
০২। গোকর্ন বেড়িবাধ
০৩। চৈয়ারকুরি বেরিবাধ
০৪। নুরপুর সাহেব বাড়ি জামে মসজিদ
০৫। নুরপুর সাহেব বাড়ি মাজার শরিফ
০৬। কামাড়িয়া পার্ক
০৭। শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালী মন্দির, ফান্দাউক।
০৮। কচুয়া দরবার শরীফ
০৯। কাহেতুরা মসজিদ
১০। গুনিয়াউক বাগান বাড়ী
১১। গোকর্ণ নবাব বাড়ি
১২। জয়কুমার জমিদার বাড়ি
১৩। দাঁতমণ্ডল আজিজিয়া দরবার শরীফ
১৪। নাসিরনগর জগন্নাথ মন্দির
১৫। ফান্দাউক ইসকন মন্দির
১৬। বড়ধলিয়া আবদুল্লাহ শাহ মাজার
১৭। মেদির হাওড় মিনি কক্সবাজার
১৮। সৈয়দ নাছিরুল হক মাসুম -এর মাজার
১৯। সৈয়দ ‘ম’ আলী -এর মাজার
২০। হরিপুর বড়বাড়ি
২১। আব্দুল্লাহ হুজুরের মাজার-ভুবন
২২। জেঠাগ্রাম বণিক বাড়ি-আদর্শ পাড়া- জেঠগ্রাম
২৩। নাসিরনগর মেদির হাওর
২৪। মন্দিরের উপর ঐতিহাসিক বটগাছ
নাসিরনগর থানাধীন বিটে দায়িত্বরত অফিসারের মোবাইল নম্বর নিম্নে ছক দেওয়া হইলঃ
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস